বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

লকডাউনেও মাদ্রাসায় চলছে পরীক্ষা  

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ৭ এপ্রিল, ২০২১ ২১:২৬

পঞ্চম শ্রেণির পরীক্ষার্থী রেজওয়ানুল ফেরদৌস  জানায়, মাদ্রাসার পরিচালক তাদের অভিভাবকদের মোবাইলে ডেকে নিয়ে পরীক্ষা দিতে বলেছে। তাই তারা এসেছে পরীক্ষা দিতে। আজ বাংলা পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। 

নীলফামারীর সৈয়দপুরে সরকার ঘোষিত লকডাউন উপেক্ষা করে অনেকটা দাপটের সঙ্গেই একটি মাদ্রাসায় পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে।

বুধবার সকালে শহরের টেকনিক্যাল কলেজপাড়া এলাকার আল হেরা হিফজুল কুরআন অ্যান্ড নূরানী কিন্ডারগার্টেন নামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা নেয়ার দৃশ্য দেখা গেছে।

করোনার প্রকোপের সময় কোমলমতি শিশুদের ডেকে নিয়ে পরীক্ষা গ্রহণের ঘটনায় এলাকাবাসী ও অভিভাবকদের মাঝে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সেই সঙ্গে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার সকাল ১০ টায় সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, ওই এলাকার আল হেরা হিফজুল কুরআন অ্যান্ড নূরানী কিন্ডারগার্টেন নামের প্রতিষ্ঠানটি খোলা। অফিস কক্ষে প্রায় সব শিক্ষকই উপস্থিত। দ্বিতল ভবনের নিচ তলায় ক্লাস রুমগুলো ফাঁকা।

কিন্তু দ্বিতীয় তলায় একটি কক্ষে চলছে পরীক্ষা। সেখানে অভিভাবকরাও উপস্থিত। শিশু শ্রেণির ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিচ্ছে।

পঞ্চম শ্রেণির পরীক্ষার্থী রেজওয়ানুল ফেরদৌস জানায়, মাদ্রাসার পরিচালক তাদের অভিভাবকদের মোবাইলে ডেকে নিয়ে পরীক্ষা দিতে বলেছে। তাই তারা এসেছে পরীক্ষা দিতে। আজ বাংলা পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে।

একই কথা জানায় আরেক পরীক্ষার্থী আদনান। সে শিশু শ্রেণির আরবি পরীক্ষা দিচ্ছে।

সাংবাদিকদের দেখে অভিভাবকরা সটকে পড়েন। এ সময় ভিডিও করতে গেলে মাদ্রাসার পরিচালক আল মাহদী বাধা দেন এবং হম্বিতম্বি করেন।

তিনি বলেন, আমাদের বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের এনে প্রশ্নপত্র বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছে। তারা বাসায় গিয়ে বোর্ডের দেয়া খাতায় পরীক্ষা দিবে। এখানে কোনো পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে না।

শিক্ষার্থীরা নিজেরাই তো বললো তারা পরীক্ষা দিতে এসেছে। তাহলে কি তারা মিথ্যা বলেছে- এমন প্রশ্নের উত্তরে আল মাহদী বলেন, ‘গত ৭ মাসে অনেক সাংবাদিক ও প্রশাসনের লোক এসেছেন। কিন্তু কেউ কিছুই করতে পারেননি।

‘আমরা ইক্বরা নূরানী হিফজুল কুরআন বোর্ডের অধীনে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করি। বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি। আমাদেরটা কওমি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এখানে কোনো বন্ধ ঘোষণা হয়নি।’

আল মাহদী এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানের উপদেষ্টা উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সৈয়দপুর দারুল উলুম মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা হারুন রিয়াজির সঙ্গে কথা বলতে বলেন। তাঁর সাথে মুঠোফোন কথা হলে তিনি বলেন, ‘করোনায় তো মাদ্রাসা খোলা থাকার কথা নয়। তবুও খুলে থাকলে তা বন্ধ করে দেয়া হবে।’

অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে প্রতিষ্ঠিত ও তদারকিতে পরিচালিত স্বেচ্ছাসেবীদের সংগঠন সুভা'র ২ জন সদস্য এখানে শিক্ষকতা করেন।

এদের মাধ্যমে প্রশাসনের সঙ্গে লিয়াজোঁ রেখে সকল সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। যে কারণে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও ওই মাদরাসাটি পরীক্ষা নিচ্ছে বহাল তবিয়তে।

সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাসিম আহমেদের সঙ্গে মুঠোফোন কথা হলে তিনি বিষয়টি দেখছেন বলে জানান।

কিন্তু এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে জানায় এলাকাবাসী।

তারা আরও জানান, এই মাদ্রাসায় এলাকার কোনো শিক্ষার্থী নেই। শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা আসে। করোনাকালে বন্ধ রাখার জন্য বলা হলেও তারা শোনেনি।

পরিচালকের বাবা ও প্রতিষ্ঠাতা সাবেক সেনা সদস্য হওয়ায় এবং পরিচালক নিজে হেফাজতের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় অনেকটা গায়ের জোরেই চলে। এতে তারা আতঙ্কে থাকলেও কারো কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায় না।

এ বিভাগের আরো খবর